0 awesome comments!
তিশার দিনযাপন
পার্কের ধারে বাড়ি। হোক না এক চিলতে। তবুও সেটাকে দিব্যি পার্ক বলা চলে। পার্কে এপাশ-ওপাশ ঘুরে এসে দাঁড়িয়েছি ফ্ল্যাটবাড়ির সদর দরজায়। তিশা নেমে আসবেন। গাড়িতে তাঁর সঙ্গে যাব উত্তরা অবধি। আলভী আহমেদ পরিচালিত ধারাবাহিক নাগরিক-এর শুটিং চলছে ওখানে। বনানি টু উত্তরা। এর মধ্যেই সাক্ষাৎকার পর্ব শেষ করার ইচ্ছে। মিনিট পাঁচেক পেরোয়নি। ওপাশে লিফটের দরজা খুলে গেল। তিশা গাড়িতে উঠে বসলেন।
এ-গলি ও-গলি ঘুরে গাড়ি উঠেছে বড় রাস্তায়। আলাপ পর্ব শুরু।
কেমন আছেন? শুরুতেই একটা লঘু প্রশ্ন।
‘ ভালোই আছি। কিন্তু গরমে কাহিল।’ তিশা হেসে বললেন।
নাগরিক ধারাবাহিকে আপনার চরিত্রটা কী?
‘একটা মেয়ে গ্রাম থেকে এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে। আসার পথে বাসে বোমা হামলায় মেয়েটার বাবা মারা যায়। এর পর থেকে মেয়েটার প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠে সংবাদমাধ্যমগুলো।’
চরিত্রের সূত্র থেকে আরেক চরিত্রের কথা আসে।তহমিনার দিনযাপন নাটকের চরিত্রটি তিশাকে এনে দিয়েছে এবারে সেরা অভিনেত্রীর মেরিল-প্রথম আলো সমালোচক পুরস্কার (এই নাটকেরও নির্মাতা আলভী আহমেদ)।
নাটকে বা চলচ্চিত্রে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার জয়টা নতুন কিছু নয় তিশার জন্য। পঞ্চম মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার কি নতুন কিছু যোগ করল জীবনে?
‘পুরস্কার জেতা মানে আমার কাছে একটা দায়বদ্ধতা। এটার দিকে যতবার তাকাই, মনে হয়, ভালো কাজ করার জন্য আমি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। মনে হয়, আমাকে খুব দায়িত্বপূর্ণ একটা পদে বসানো হয়েছে। ’
উইথ গ্রেট পাওয়ার কামস গ্রেট রেসপনসিবিলটি?
‘আসলেও ব্যাপারটা তা-ই।’ সায় দিলেন তিশা।
কিন্তু উপস্থাপকের জায়গা থেকে এসে পুরস্কার নেওয়াটা এবারই প্রথম।
‘সেটা তো অবশ্যই। শেষবার আমি উপস্থাপনা করেছি নতুন কুঁড়িতে। সেটা ছোট্টবেলার কথা। এবারে যখন শুনলাম, মেরিল-প্রথম আলো অনুষ্ঠানের উপস্থাপক হিসেবে আমাকে ভাবা হচ্ছে, সত্যিই আমার মাথা খুব বেশি কাজ করছিল না। সরয়ারকে (মোস্তফা সরয়ার ফারুকী) বললাম। ও এককথায় বলে দিল ‘করো।’ কি মুশকিল। আমি তো জানি, এত বড় অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করতে যাওয়া মানে...’
স্ত্রীর উৎকণ্ঠা দেখে নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী অবশেষে একটি বড় বাক্য বলেছিলেন। সেটি হচ্ছে, ‘আই থিঙ্ক ইউ ক্যান ডু ইট।’
এর পর? এর পরের ঘটনা তো গেল ২৬ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের হল অব ফেমে বসেই দেখেছেন দর্শকরা। নুসরাত ইমরোজ তিশা বলছিলেন, ‘উপস্থাপনার পুরো সময়টাই একটা ঘোরের মধ্যে ছিলাম আমি। এখন চারদিক থেকে শুধু অনুষ্ঠান উপস্থাপনার প্রস্তাব পাচ্ছি।’
মেরিল-প্রথম আলো অনুষ্ঠানের উপস্থাপক চরিত্রের জন্য তিশাকে চড়তে হয়েছে হেলিকপ্টারে। কেমন লাগল?
‘বিমানে তো কতই চড়া হয়। কিন্তু হেলিকপ্টারে এবারই প্রথম। শুরুতে মনে হচ্ছিল, আমাকে একটা খেলনা টাইপ কিছুতে চড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। দড়াবাজদের মতো শূন্যে ঝুলছি। হেলিকপ্টার যখন ওপরে উঠে গেল, তখন মজা লেগেছে। তবে হেলিকপ্টার নয়, আমার বেশি ভয় লেগেছে চার চাকার বিয়ারিং গাড়িটা। ওটাতে দাঁড়িয়ে মনে হচ্ছিল যে কোন সময়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ে যাব। ’
ঘুরেফিরে এল টেলিভিশন প্রসঙ্গ। ছবিটার নাম পরিবর্তনের খবর ভাসছে বাতাসে। শেষ বেলায় মুক্তি প্রতীক্ষিত এই ছবির নাম হয়ে যেতে পারে কানামাছি। এটিই হবে গ্রামীণ পটভূমিতে তৈরি মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর প্রথম চলচ্চিত্র। মানুষের নানামুখী সম্পর্কের গল্প নিয়ে এই ছবি আসছে বছরের শেষভাগে। থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার-এ ছিলেন পুরোদস্তুর শহুরে মেয়ে। এবারে তিশার চরিত্র অগ্রসর চিন্তার অধিকারী এক গ্রামের মেয়ের। ছবিতে আরও আছেন চঞ্চল চৌধুরী ও মোশাররফ করিম।
গাড়ি প্রায় চলে এসেছে উত্তরা। শেষবেলায় আরও একটা প্রশ্ন। একদিন সকাল বেলা ঘুম থেকে জেগে দেখলেন, আপনি আর তারকা অভিনেত্রী তিশা নন। ফিরে গেছেন পেছনের জীবনে। কেমন লাগবে?
‘আমি কি তখন আগের মতো ছোট হয়ে যাব? তাহলে বাবাকে দেখতে পাব। বাবা (মোহাম্মদ ইনামুল হক) ছিল আমার কাছে একটা শিশুর মতো। সেই ছোটবেলা থেকে অভ্যাস। বাবার সঙ্গে ঘুমাতাম। বাবার ডায়বেটিস ছিল। তাঁকে সময়মতো গোসল করানো, কাপড়চোপড় পরানো, ওষুধ খাওয়ানো, পা টিপে দেওয়া, নখ কেটে দেওয়া। সব কাজ আমি করতাম। বাবার সঙ্গে আমি কত দেশে যে গেছি। বাবা প্রায়ই বলতেন, “আমাকে সবাই যেন একদিন তিশার বাবা হিসেবে চেনে।” এখন বাবা নেই। মা’ই (শাহীন মাহফুজা হক) আমার সবকিছু।’
বলতে বলতে তিশার মুখে বিষাদের ছায়া পড়ল। হয়তো পাকা অভিনেত্রী বলেই পুরোপুরি চোখ ছলছল করল না। কিন্তু গলাটা ঠিক ভারী শোনাল। গাড়ি উত্তরার শুটিংবাড়ির গেটে চলে এসেছে। তিশা গাড়ি থেকে নামছেন। ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানোর আগে তারকা অভিনেত্রী তিশা হয়তো এক কাপ চা খাবেন। সেই চা হবে অবশ্যই চিনি ছাড়া। না, ডায়েটের জন্য নয়। বাবা ডায়াবেটিসের রোগী হওয়ার কারণে কত দিন চায়ে চিনি খেতে পারেননি। চিনি সহ চা বাবাভক্ত মেয়ে কীভাবে মুখে তুলবেন? বাবার জন্য মন খারাপ হবে না তখন?
তিশা ভক্তরা জেনে রাখুন, শুধুমাত্র তাঁর বাবা চায়ে চিনি খেতে পারতেন না বলেই চিরতরে চিনি খাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন আপনাদের প্রিয় অভিনেত্রী।
এ-গলি ও-গলি ঘুরে গাড়ি উঠেছে বড় রাস্তায়। আলাপ পর্ব শুরু।
কেমন আছেন? শুরুতেই একটা লঘু প্রশ্ন।
‘ ভালোই আছি। কিন্তু গরমে কাহিল।’ তিশা হেসে বললেন।
নাগরিক ধারাবাহিকে আপনার চরিত্রটা কী?
‘একটা মেয়ে গ্রাম থেকে এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে। আসার পথে বাসে বোমা হামলায় মেয়েটার বাবা মারা যায়। এর পর থেকে মেয়েটার প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠে সংবাদমাধ্যমগুলো।’
চরিত্রের সূত্র থেকে আরেক চরিত্রের কথা আসে।তহমিনার দিনযাপন নাটকের চরিত্রটি তিশাকে এনে দিয়েছে এবারে সেরা অভিনেত্রীর মেরিল-প্রথম আলো সমালোচক পুরস্কার (এই নাটকেরও নির্মাতা আলভী আহমেদ)।
নাটকে বা চলচ্চিত্রে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার জয়টা নতুন কিছু নয় তিশার জন্য। পঞ্চম মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার কি নতুন কিছু যোগ করল জীবনে?
‘পুরস্কার জেতা মানে আমার কাছে একটা দায়বদ্ধতা। এটার দিকে যতবার তাকাই, মনে হয়, ভালো কাজ করার জন্য আমি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। মনে হয়, আমাকে খুব দায়িত্বপূর্ণ একটা পদে বসানো হয়েছে। ’
উইথ গ্রেট পাওয়ার কামস গ্রেট রেসপনসিবিলটি?
‘আসলেও ব্যাপারটা তা-ই।’ সায় দিলেন তিশা।
কিন্তু উপস্থাপকের জায়গা থেকে এসে পুরস্কার নেওয়াটা এবারই প্রথম।
‘সেটা তো অবশ্যই। শেষবার আমি উপস্থাপনা করেছি নতুন কুঁড়িতে। সেটা ছোট্টবেলার কথা। এবারে যখন শুনলাম, মেরিল-প্রথম আলো অনুষ্ঠানের উপস্থাপক হিসেবে আমাকে ভাবা হচ্ছে, সত্যিই আমার মাথা খুব বেশি কাজ করছিল না। সরয়ারকে (মোস্তফা সরয়ার ফারুকী) বললাম। ও এককথায় বলে দিল ‘করো।’ কি মুশকিল। আমি তো জানি, এত বড় অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করতে যাওয়া মানে...’
স্ত্রীর উৎকণ্ঠা দেখে নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী অবশেষে একটি বড় বাক্য বলেছিলেন। সেটি হচ্ছে, ‘আই থিঙ্ক ইউ ক্যান ডু ইট।’
এর পর? এর পরের ঘটনা তো গেল ২৬ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের হল অব ফেমে বসেই দেখেছেন দর্শকরা। নুসরাত ইমরোজ তিশা বলছিলেন, ‘উপস্থাপনার পুরো সময়টাই একটা ঘোরের মধ্যে ছিলাম আমি। এখন চারদিক থেকে শুধু অনুষ্ঠান উপস্থাপনার প্রস্তাব পাচ্ছি।’
মেরিল-প্রথম আলো অনুষ্ঠানের উপস্থাপক চরিত্রের জন্য তিশাকে চড়তে হয়েছে হেলিকপ্টারে। কেমন লাগল?
‘বিমানে তো কতই চড়া হয়। কিন্তু হেলিকপ্টারে এবারই প্রথম। শুরুতে মনে হচ্ছিল, আমাকে একটা খেলনা টাইপ কিছুতে চড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। দড়াবাজদের মতো শূন্যে ঝুলছি। হেলিকপ্টার যখন ওপরে উঠে গেল, তখন মজা লেগেছে। তবে হেলিকপ্টার নয়, আমার বেশি ভয় লেগেছে চার চাকার বিয়ারিং গাড়িটা। ওটাতে দাঁড়িয়ে মনে হচ্ছিল যে কোন সময়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ে যাব। ’
ঘুরেফিরে এল টেলিভিশন প্রসঙ্গ। ছবিটার নাম পরিবর্তনের খবর ভাসছে বাতাসে। শেষ বেলায় মুক্তি প্রতীক্ষিত এই ছবির নাম হয়ে যেতে পারে কানামাছি। এটিই হবে গ্রামীণ পটভূমিতে তৈরি মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর প্রথম চলচ্চিত্র। মানুষের নানামুখী সম্পর্কের গল্প নিয়ে এই ছবি আসছে বছরের শেষভাগে। থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার-এ ছিলেন পুরোদস্তুর শহুরে মেয়ে। এবারে তিশার চরিত্র অগ্রসর চিন্তার অধিকারী এক গ্রামের মেয়ের। ছবিতে আরও আছেন চঞ্চল চৌধুরী ও মোশাররফ করিম।
গাড়ি প্রায় চলে এসেছে উত্তরা। শেষবেলায় আরও একটা প্রশ্ন। একদিন সকাল বেলা ঘুম থেকে জেগে দেখলেন, আপনি আর তারকা অভিনেত্রী তিশা নন। ফিরে গেছেন পেছনের জীবনে। কেমন লাগবে?
‘আমি কি তখন আগের মতো ছোট হয়ে যাব? তাহলে বাবাকে দেখতে পাব। বাবা (মোহাম্মদ ইনামুল হক) ছিল আমার কাছে একটা শিশুর মতো। সেই ছোটবেলা থেকে অভ্যাস। বাবার সঙ্গে ঘুমাতাম। বাবার ডায়বেটিস ছিল। তাঁকে সময়মতো গোসল করানো, কাপড়চোপড় পরানো, ওষুধ খাওয়ানো, পা টিপে দেওয়া, নখ কেটে দেওয়া। সব কাজ আমি করতাম। বাবার সঙ্গে আমি কত দেশে যে গেছি। বাবা প্রায়ই বলতেন, “আমাকে সবাই যেন একদিন তিশার বাবা হিসেবে চেনে।” এখন বাবা নেই। মা’ই (শাহীন মাহফুজা হক) আমার সবকিছু।’
বলতে বলতে তিশার মুখে বিষাদের ছায়া পড়ল। হয়তো পাকা অভিনেত্রী বলেই পুরোপুরি চোখ ছলছল করল না। কিন্তু গলাটা ঠিক ভারী শোনাল। গাড়ি উত্তরার শুটিংবাড়ির গেটে চলে এসেছে। তিশা গাড়ি থেকে নামছেন। ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানোর আগে তারকা অভিনেত্রী তিশা হয়তো এক কাপ চা খাবেন। সেই চা হবে অবশ্যই চিনি ছাড়া। না, ডায়েটের জন্য নয়। বাবা ডায়াবেটিসের রোগী হওয়ার কারণে কত দিন চায়ে চিনি খেতে পারেননি। চিনি সহ চা বাবাভক্ত মেয়ে কীভাবে মুখে তুলবেন? বাবার জন্য মন খারাপ হবে না তখন?
তিশা ভক্তরা জেনে রাখুন, শুধুমাত্র তাঁর বাবা চায়ে চিনি খেতে পারতেন না বলেই চিরতরে চিনি খাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন আপনাদের প্রিয় অভিনেত্রী।
Published in
Banglatainment

‘একে একে চলিয়া যাবে সবাই, তুমিও যাবে আমিও যাব, মিছে…
বলিউড অভিনেত্রী শিল্পা শেঠি। নিজের পাশাপাশি তার আশপাশের মানুষের স্বাস্থ্য…
সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেদের জীবনের যৌন হেনস্থার কথা নিয়ে সম্প্রতি সরব…
ইউটিউবে প্রকাশের কিছু সময়ের মধ্যেই ব্যাপক সারা জাগিয়েছে অভিনেত্রী পরীমনির…
বলিউডের হলোটা কী? একের পর এক যৌনতা নির্ভর সিনেমা তৈরি… 