ইতালিতে শোকের ছায়া, ক্ষোভ আহাজারি

Rate this item
(1 Vote)
রিয়াজ হোসেন, ইতালি

গুলশানে ১ জুলাইর জঙ্গি হামলার ঘটনায় এখনো শোকের ছায়া ইতালিতে। আহাজারি স্বজন হারানো পরিবারগুলোতে। সাধারণ ইতালীয়রা ক্ষুব্ধ। ক্রুদ্ধ আচরণের সংবাদও পাওয়া যায়। স্টেফানোর কথাই ধরা যাক। সে পেশায় গাড়িচালক। তার সঙ্গে কথা হচ্ছিল গুলশানে জঙ্গি হামলায় ৯ জন ইতালীয় নিহত হওয়া বিষয়ে। স্টেফানো রেগে গিয়ে বলল, শুনতে চাই না বাংলাদেশের কথা।

তোমরা আমাদের ১১ জন নাগরিককে নৃশংসভাবে হত্যা করেছ। যেন চোখে-মুখে ঘৃণা আর কষ্টের ছাপ। নব্বই বছরের জুলিয়া সারা মেট্রো রেলের মধ্যে বসে টিভি সংবাদে বাংলাদেশে নারকীয় জঙ্গি হামলার চিত্র দেখছিল আর চোখ বেয়ে অঝোরে ঝরছিল পানি। কাছে যেতেই বলল, বাংলাদেশ দূরে যাও, ইতালিতে দুই লাখ বাংলাদেশিকে আমরা নিরাপত্তা দিচ্ছি। অথচ তোমরা তোমাদের দেশে অল্প কয়েকজন বিদেশিকে নিরাপত্তা দিতে পারছ না।

কোনো দিন তোমাদের দেশে যাব না, তোমাদের গার্মেন্ট পরব না। এ যেন বাংলাদেশের প্রতি ঘৃণা আর প্রবাসী বাংলাদেশিরা তাদের কাছে অপরাধীর মতো। সব মিলিয়ে আতঙ্কে ইতালি প্রবাসী বাংলাদেশিরা। ৪ জুলাই সকালে প্রবাসী ইলিয়াস হোসেন তার কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য বাসে উঠতে গেলে তাকে অনেকটা ধাক্কা দিয়ে বাস থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। রোমে বাংলাদেশি দুই ফুল বিক্রেতাকে মারধর করেছে ইতালীয় চার যুবক।

টিজেফোর এমন সংবাদ প্রচার করেছে। প্রবাসী ব্যবসায়ী এম এ রব মিন্টু বলেন, জঙ্গিরা ইতালীয়দের নিষ্ঠুর পন্থায় হত্যা করায় এখন আমরা নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে পারি। আফগানিস্তান, পাকিস্তানিদের মতো বাংলাদেশিদেরও জঙ্গি তালিকায় রেখে ইতালীয় কর্তৃপক্ষ অবৈধ বাংলাদেশিদের তল্লাশি বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে পুলিশ বলছে, নিয়মিত রুটিনে তল্লাশি চলছে।

ইতালীয়রা রাগের মাথায় কোনো কিছু বললে তাদের সঙ্গে ঝগড়া না করার পরামর্শ দিয়েছেন ইতালিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. শাহদৎ হোসেন। ইতালিতে রাষ্ট্রীয় শোকে নিহতদের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন রাষ্ট্রদূত। ইতালির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে একাধিকবার সাক্ষাৎ করেছেন। ৫ জুলাই সন্ধ্যায় রোমের লিউনার্দি দ্যা ভিঞ্চি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিহতের লাশ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা গ্রহণ করেন। এ সময় স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে বিমানবন্দর।
0 awesome comments!
Scroll to Top